মৃত্যুদণ্ড





মৃত্যুদণ্ড
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

খোঁজ রাখেনি কেউ যখন পড়ে ছিলাম,
আবর্জনা ঢিবির নাম অজানা জীবাণুর সাথে।
সমবেদনা জ্ঞাপনে আসেনি কোনো ভদ্র সুসমাজ,
মাতৃদুগ্ধ পড়েনি মুখে যখন ক্ষুধায় উঠেছিল নাভিশ্বাস।।
ভিক্ষুকের বেশে ঘুরেছি কত,তোমাদের দ্বারে দ্বারে,
চলন্ত গাড়িতে কতবার,লাথি খেয়েছি,পা জড়িয়ে ধরে।
এক পয়সা দাওনি,কে দিয়েছিল তোমায় লাথির অধিকার?
রুগ্ন শরীর সোয়েছিল সেদিন মুখ বুজে যাবতীয় অবিচার।
ক্ষুধার সাথে লড়তে শেখায় টাইম কলের জল,
অগোনা ফোটা জমিয়েছিলাম পেটে তবু গায়ে বাড়েনি বল।
রাস্তার ধারে পড়ে থাকা খাবারের কণা,খেয়েছি কুড়িয়ে,
চরম প্রতিযোগিতায় টিকেছিলাম শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে।
আজ আমি বড় হয়েছি তবে লোকে বলে সন্ত্রাসী,
পয়সাও তো হয়েছে অনেক ছেড়ে গেছে ভিক্ষাবৃত্তি।
সেদিনের সাথে জীবনযাত্রার আজ আকাশ পাতাল ফারাক,
রক্ত মেখে চলতে দেখায় শহরবাসী অবাক।
টাকা নেই সাথে জীবন ও নেই,নেওয়াই আমার কাজ,
জমা রক্তের আষ্টে গন্ধে নাক আটে সুসমাজ।
আঙ্গুল উঠিয়ে দেখায় আমায়,পাপের জন্মদাতা,
পাপকর্মের ফলে জন্ম যার,সে হবে কি পরিত্রাতা?
সুসমাজ তুমি দাওনি মুখে দুমুঠো ভাত তুলে,
সূর্যের আলোয় পুড়েছি আবার ধুকেছি বৃষ্টি ভিজে।
সেদিন কোথায় ছিল সুসমাজ তোমার মানবিকতার দৃষ্টি?
তোমার থেকে আঘাত পেয়ে এই নিকৃষ্ট আসামীর সৃষ্টি।।
আজ আইন আমায় তাড়িয়ে বেড়ায় বিশৃঙ্খলার দোষে,
আমার জীবনও নাকি অমূল্য,নির্বোধ আদালতের চোখে।
খতিয়ে দেখতে ব্যস্ত আদালত পাপের আদ্যান্ত,
অন্ধ আইনের অগোচরে রবে,পাপেই আমার জন্ম।
মানবের আদালতে হয়ত আমি আপাদমস্তক অপরাধী,
মনুষ্যত্বের আদালত বলবে হয়ত হতভাগ্য এ পাপী।
না হয় আমি বাবা মায়ের সাময়িক উত্তেজনার ফল,
আদর সোহাগ পাইনি বলে ভেবোনা দূর্বল।
একটু ভাবুন বিচারপতি,কেন নৃশংসতার দিলাম জন্ম?
উত্তর দিন,মাথা পেতে নেব ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলন্ত ,"মৃত্যুদণ্ড"।

No comments:

Post a Comment